কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে নানা প্রজাতির বাঁশের। এতে জীবিকা নির্বাহ হয় পাহাড়ের দুই হাজারের বেশি পরিবারের। পাহাড়ের ময়নামতি থেকে চন্ডিমুড়া পর্যন্ত অংশে চাষ হওয়া এসব বাঁশ থেকে বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বাণিজ্য হয় বলে জানা গেছে। গৃহস্থালি সামগ্রী থেকে বসতঘর, ফসলের ক্ষেতের মাচা থেকে নির্মাণ সামগ্রী, এমনকি মাছ ধরার ফাঁদ, নানান শিল্পে বাণিজ্যিকভাবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে এই বাঁশ চাষে আগের তুলনায় অধিক ঝোঁক বেড়েছে চাষীদের। প্রায় ৪শ’ বছর ধরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে গুণগত মানের বিভিন্ন জাতের বাঁশচাষ হচ্ছে। আর কৃষি বিভাগ বলছে, চাষিরা লাভবান হওয়ায় লালমাই পাহাড়ে প্রতি বছর বাড়ছে চাষের জমির পরিমাণ।
জানা গেছে, বাঁশের কুলা, খাঁচা, ওরা, ঝুঁড়ি, ডালা এবং মাছ ধরার নানান ফাঁদ তৈরি করছেন নারীরা। কুমিল্লার শহরতলীর নমশূদ্র পল্লীর প্রায় পনেরশ পরিবারের পেশা এ বাঁশ শিল্প ঘিরে। তাদের তৈরিকৃত প্রতিটি পণ্য মানভেদে বাজাওে পঞ্চাশ থেকে দুই’শ টাকায় বিক্রি করতে পারেন শিল্পীরা। তা দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়া, ঋণ পরিশোধ এবং আনুষাঙ্গিক খরচ মেটান তারা ।নমশূদ্র পল্লী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য উদ্যোক্তা। যাদের কাঁচামাল হিসেবে লালমাই পাহাড়ের বাঁশেই নির্ভরতা।
জানা গেছে, কুমিল্লার ময়নামতি থেকে চন্ডিমুড়া পর্যন্ত পাহাড়ের অন্তত একশো একর ভূমিতে বাণিজ্যিকভাবে বাঁশ চাষ হচ্ছে। সমতল থেকে পাহাড়ের চূড়া। চোখে পড়বে সারি সারি বাঁশ বাগান। এখানে রয়েছে তল্লা, মুলি, বরাক, কাটা বরাক, হিল বরাক, বোম, কনক, বারি ও পেঁচাসহ নানান জাতের বাঁশ। তবে সবথেকে বেশি বাঁশঝাড় চোখে পড়ে মধ্যম বিজয়পুর, ধনমুড়া, বড় ধর্মপুর, রাজারখলা, ভাঙ্গামুড়া, জামমুড়া, বৈষ্ণবমুড়া, লালমতি, গন্ধমতি ও সালমানপুরে। চাষে খরচের বিপরীতে বিক্রয় মূল্য বেশি হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় চাষীদের মাঝে।