টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ঢলের পানিতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলা শহর এবং বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মধ্যবাজার, উত্তর আরপিননগর, কাজীরপয়েন্টসহ বেশ কিছু এলাকার সড়ক। সেই সঙ্গে তলিয়ে গেছে শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকা হাসননগরের ৫০টিরও বেশি ঘরবাড়ি ও দোকানপাট।
এদিকে, ঢলের পানি নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই অঞ্চলের মানুষজন। অনেকেই তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা উঁচু এলাকায় আত্মীয় স্বজনদের বাসায় ছুটছেন।
জেলা প্রশাসক রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার জেলার প্রধান নদী সুরমার পানি বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সাথে জেলার সীমান্তবর্তী ছাতক, দোয়ারাবাজার ও তাহিরপুর উপজেলার নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ -৪ আসনের সংসদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।
ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সুনামগঞ্জ জেলায় ৫১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর ও জগন্নাথপুরে ৫ টন করে জিআর চাল দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৬০০ টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। শুকনো খাবার, শিশু ও গো-খাদ্যের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। এ পর্যন্ত নগদ ১০ লাখ টাকা বিভিন্ন উপজেলায় দেয়া হয়েছে।