ফ্রান্সে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটাক্ষ করে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনীর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার, কনেশতলা গ্রামের সর্বোস্তরের জনগণ। সোমবার (২ নভেম্বর ) আছরের নামাযের পরে কনেশতলা বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়৷
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কনেশতলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার নূরানি বিভাগের শিক্ষক ক্বারি আমির হোসেন সাহেব,হেফজ খানার শিক্ষক মুফতী জুবায়ের সাহেব,মহিলা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মোঃ লোকমান হোসেন,হাফেজ আব্দুল্লাহ, স্থানীয় বাজারের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ি মোঃমুজিবর রহমান সহ এলাকার সর্বোস্তরের জনগণ
এ কর্মসূচির আয়োজকদের প্রধান ক্বারি মুহাম্মদ আমির হোসেন বলেন, ‘ফান্সে সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে ইসলামকে অবমাননা করে রাসুল (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে আজ আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। শুধু ফ্রান্সে নয়, বিশ্বের অনেকগুলো দেশে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। আমরা সেই সব ঘটনার নিন্দা জানাই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকার প্রকাশ্যে রাসুল (সা.) এবং ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করেছে। আমরা তার শাস্তি দাবি করছি। সেই সঙ্গে ইসলামকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জিয়া রহমান ব্যঙ্গাত্মকভাবে কথা বলেছেন। আমরা এসবের নিন্দা জানাচ্ছি এবং এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ফ্রান্স সরকার তাদের নিজেদের সেক্যুলার হিসেবে দাবি করে। একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র সরাসরি কোনও ধর্মকে আঘাত করে কিছু করতে পারে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সারাবিশ্বের মুসলমান দেশকে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
হাফেজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ফান্সের শার্লি এবদো নামে একটি ম্যাগাজিন নবী করিম (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করেছে। বাক স্বাধীনতা এমনভাবে উপভোগ করতে হবে যাতে তা অন্য কোনও ধর্ম বা কারও ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত না করে। মুহাম্মদ (সা.)-কে মুসলমান জাতি তাদের নয়নের মনি কোটায় স্থান দিয়েছে। তাকে অমর্যাদা করে ফ্রান্সে যা করা হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
সমাবেশ থেকে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিন্দা প্রস্তাব এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে তলব করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনী হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই ফ্রান্স সরকারের এ কর্মকাণ্ডে নিন্দা জানাতে হবে এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এর প্রতিবাদ জানাতে হবে। অন্যথায়, আমাদের আন্দোলন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।
গত ১৬ অক্টোবর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক স্কুলশিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ সম্পর্কে পুলিশ জানায়, হামলাকারীর বয়স ১৮ বছর। তিনি চেচেন জাতিগোষ্ঠীর এবং জন্ম রাশিয়ার মস্কোতে। নিহত শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতেন। ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ ক্লাসে তিনি শিক্ষার্থীদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন দেখিয়েছিলেন। তার পর তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর ফ্রান্সের পুলিশ দেশটির অন্তত ৫০টি মসজিদ এবং মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ভয়াবহ অভিযান চালায়। সাড়ে পাঁচ বছর আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিতর্কিত কার্টুন ছাপানোর পর ফ্রান্সের ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এবদোতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। আবারও সেটি ছাপিয়েছে ম্যাগাজিনটি। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও এর পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরোঁ।