ফিফার কঠোর আইনে আটকে গেলো বাংলাদেশের চার কিশোর ফুটবলারের ব্রাজিলে বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ। বাংলাদেশের এই চার ফুটবলারের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাদের ব্রাজিলে দীর্ঘ মেয়াদে প্রশিক্ষণ নেয়া হচ্ছে না।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এখন তাদের তিন-চার সপ্তাহের জন্য পেলে-নেইমারদের দেশে পাঠানোর চেষ্টা করছে। তাও কবে নাগাদ পাঠানো সম্ভব হবে তা নিশ্চিত নয়। এখন দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ফুটবল ফেডারেশনের মধ্যে সমঝোতা চুক্তির পর তাদের ব্রাজিল যাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হবে।
এ নিয়ে বুধবার সচিবালয়ে আলোচনা করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিল রাষ্ট্রদূত হোয়াও তাবাজারা ডি অলিভিরা। সেখানেই আলোচনা হয়েছে নতুন করে চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের ফুটবলে ব্রাজিলের সহায়তার বিষয়টি।
১৮ বছরের কম বয়সী কোনো ফুটবলারকে অন্য দেশের কোনো একাডেমি বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়ে কঠোর বিধি নিষেধ আছে ফিফার। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যে চার ফুটবলারকে ব্রাজিল পাঠানোর জন্য নির্বাচিত করেছে, তাদের সবার বয়স ১৭ বছরেরও নিচে।
বুধবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিল রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান বলেছেন, ‘ যাদের ট্রেনিং দিয়েছি তাদের আমাদের অধীনে এক বছর অনুশীলনের মধ্যে রাখবো। তাদের বয়স ১৮ বছর হলে আগামীতে এক বছরের জন্য প্রশিক্ষণের জন্য ব্রাজিল পাঠাবো। আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
দীর্ঘ মেয়াদে ব্রাজিলে পাঠানোর পরিকল্পনা ভেস্তে গেলেও বাছাই করা চার কিশোর ফুটবলারকে এখন স্বপ্ল সময়ের জন্য লাতিন আমেরিকার দেশটিতে পাঠানো হবে। সেটা অনেকটা সান্তনা হিসেবে ঘুরিয়ে আনার মতো। দুই দেশের নতুন যে চুক্তি হবে সেখানে দুই দেশের ফুটবল ফেডারেশনের সক্রিয় অংশগ্রহণও দেখতে চায় বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় খেলোয়াড় পাঠানোর প্রক্রিয়ার সাথে অবশ্য বাফুফেকে সেভাবে সম্পৃক্ত করেনি আগে।
নতুন চুক্তিতে বাংলাদেশের ফুটবল আরো বেশি উপকৃত হবে বলে মনে করছেন সাবেক তারকা ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যাদের নিয়ে খেলোয়াড় বাছাই প্রক্রিয়া সেরেছিল তাদের অন্যতম সদস্য শেখ মোহাম্মদ আসলাম। আছেন সাবেক আরো দুই ফুটবলার খন্দকার রকিবুল ইসলাম এবং বাদল রায়।
‘নতুন পরিকল্পনায় কয়েকটি বিষয় থাকবে। এখন ব্রাজিল থেকে কোচ পাঠিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে ওই দেশের সরকার। প্রাথমিকভাবে সেটা দুই বছরের জন্যও হতে পারে। বিশ্ব ফুটবলের জনপ্রিয় দেশটির জনপ্রিয় তারকাদের কেউ আসতে পারবেন প্রতিভা বাছাইয়ের জন্য। কার্লোস, রোনালদিনহোর মতো ফুটবলারদের কাউকে যদি বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে ব্রাজিল সরকার, সেটা হবে আমাদের জন্য বিশাল অর্জন’- বলেছেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম।
গত বছর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট (অনূর্ধ্ব-১৭) থেকে বাছাই করা ফুটবলাদের ট্রায়ালের মাধ্যমে যে চারজনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে তারা হলেন- রাজশাহীর জগেন লাকরা, রংপুরের লতিফুর রহমান নাহিদ, নাজমুল আকন্দ ও কুড়িগ্রামের ওমর ফারুক মিঠু।